Hits: 14
প্রথা অনুসারে ৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মাহেশে জগন্নাথের
স্নানযাত্রার সময় জগন্নাথদেবের মাথায় ছাতা ধরে আসছে শেওড়াফুলি রাজপরিবার
একটা সময় ছিল, যখন শেওড়াফুলি রাজপরিবার থেকে রুপোর ছত্র ও রাজদন্ড এসে না পৌঁছনো পর্যন্ত মাহেশে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার অনুষ্ঠান শুরু হতো না । শেওড়াফুলির রাজপরিবার ছিলো জগন্নাথদেবের ভক্ত । রাজা মনোহর চন্দ্র রায় জগন্নাথদেবের জন্য একটি মন্দিরও তৈরি করে দিয়েছিলেন, যদিও কালের গর্ভে তা এখন বিলীন হয়ে গেছে। তবে বর্তমান জগন্নাথ মন্দিরের জন্য জগন্নাথপুর মৌজাকে দেবোত্তর করে দিয়েছিলেন । যেখানে আজ রয়েছে জগন্নাথদেবের মন্দিরটি ।
সেই সময় থেকেই মাহেশে জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার সময় মাহেশের সেবাইতদের আমন্ত্রনে শেওড়াফুলি রাজপরিবারের প্রতিনিধিগণ রূপোর ছত্র ও
রৌপ্যদন্ড নিয়ে শোভাযাত্রা সহকারে এসে উপস্থিত হয়ে জগন্নাথদেবের মাথায় ছাতা ধরলে তবেই শুরু হতো জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা । কালীপ্রসন্ন মজুমদারের লেখা “হুতোম প্যাঁচার নকশা” থেকে জানা যায় মাহেশের রথযাত্রায় সে সময় এসে উপস্থিত হতেন কলকাতার বাবুরাও ।
শেওড়াফুলি রাজবাড়ীর মেয়ে তথা অধ্যাপিকা বাসবী পালের কাছ থেকে জানা যায় , একবার রাজা হরিশচন্দ্র রায়ের আমলে শ্রীরামপুরের এক ব্যবসায়ী মাহেশের সেবাইতদের সঙ্গে গোপনে পরামর্শ করে রাজপরিবারের সদস্যদের ছত্র ও রৌপ্যদন্ড নিয়ে পৌঁছানোর পূর্বেই ছাতা নিয়ে গিয়ে স্নানযাত্রার সময় জগন্নাথের মাথায় ছত্র ধরেন । এই কথা জানার পর রাজা ক্রোধিত হন এবং ঐ ব্যবসায়ীকে ধরে এনে শেওড়াফুলি রাজবাড়ীতে দুদিন আটকে রাখেন । পরে শর্তসাপেক্ষে ছেড়ে দেন । তার পর থেকে আর অন্য কেউ জগন্নাথের মাথায় ছাতা ধরেননি ।
সেই প্রথা অনুসারে আজ সকালেও স্নানযাত্রার সময় ঐ ঐতিহাসিক ছাতা ও রৌপ্যদন্ড জগন্নাথদেবের মাথায় ধরলেন শেওড়াফুলি রাজপরিবারের পুজারীগন ।