Hits: 15
অরূপ সাহা : কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজো গুলির মধ্যে অন্যতম একটি পুজো হলো দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের মল্লিক বাড়ির পুজো। আমরা সকলেই জানি এটি বিশিষ্ট অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক ও কোয়েল মল্লিকের বাড়ির পুজো । এ বছর এ বাড়ির পুজো শততম বর্ষে পদার্পণ করল ।
মল্লিক বাড়ির পুজোর সূচনা রাধাগোবিন্দ মল্লিকের হাত ধরে গুপ্তিপাড়ায় হলেও পরবর্তীকালে তারা ভবানীপুর এলাকায় চলে আসার পর রাধাগোবিন্দ মল্লিকের পুত্র সুরেন্দ্র মাধব মল্লিকের হাত ধরে এই বাড়িতেই পুনরায় মায়ের পুজো শুরু হয় ১৯২৪ সালে । সুরেন্দ্র মাধবরা ছিলেন সাত ভাই। সকলে মিলে একসঙ্গেই মেতে ওঠেন
পুজোয় ।
মল্লিক বাড়ির পুজো হয় বৈষ্ণব মতে । এ বাড়িতে পুজোয় কোন বলি প্রথা নেই । পুজোর কদিন বাড়িতে নিরামিষ খাওয়াদাওয়া হয় এবং দশমীর দিন ঠাকুর ভাসানের পর আমির খাওয়ায় নিয়ম রয়েছে এ বাড়িতে।
প্রতি বছর জন্মাষ্টমীর পরের দিন এ বাড়িতে মায়ের কাঠামো পুজো হয় এবং তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় প্রতিমা নির্মাণের কাজ । এ বাড়ির প্রতিমা হয় একচালার । মাকে সাজানো হয় ডাকের সাজে ।
পুজো উপলক্ষ্যে প্রতি বছর দেশ বিদেশ থেকে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবরা উপস্থিত হন এ
বাড়িতে । পুজোর কদিন গমগম করে ওঠে ভবানীপুরের এই মল্লিক বাড়ির । আর সকলের সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠেন রঞ্জিত মল্লিক ও কোয়েল মল্লিকও । কদিন যেন এ বাড়িতে
চাঁদের হাট বসে । সেলিব্রিটিরা সকলেই আমন্ত্রিত থাকেন এ বাড়ির পুজোয়।
প্রতি বছর এ বাড়িতে ঠাকুর দর্শনে আসেন হাজার হাজার দর্শণার্থী । তবে এবার শততম বর্ষে সর্বসাধারণের জন্য বন্ধ থাকছে মল্লিক বাড়ির দরজা। জানা যাচ্ছে আর জি করের মর্মান্তিক ঘটনার পর থেকে পরিবারের সকলেরই মন খুব খারাপ । রঞ্জিত মল্লিক জানিয়েছেন, তাই এবার রীতি নীতি মেনে পুজো হলেও তারা কোনরকম উৎসবে সামিল হচ্ছেন না । বাড়িতে পুজোর আনন্দটাও অন্যান্যবারের তুলনায় অনেকটাই ম্লান। এছাড়াও এবছর শততম বর্ষে দেশ বিদেশ থেকে অনেক আত্মীয় স্বজন আসছেন। তাই জায়গাটা অনেকটাই কম পড়ে যাবে। সেজন্যই এ বছর দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত রাখা সম্ভব হচ্ছে না মল্লিক বাড়ির দরজা। তাহলে এবার খানিকটা হতাশ হতেই হচ্ছে দর্শনার্থীদের।