শ্রীরামপুর চাতরায় শুরু হল ঐতিহ্যবাহী শীতলা পুজো

Hits: 21

রাখী সাহা

চাতরা শীতলা পূজো প্রায় দুশো বছরেরও বেশী প্রাচীন। প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে চাতরায় এই পূজো অনুষ্ঠিত হয়। দূর্গা পূজোর মতোই পাঁচ দিন ধরে চলে এই পূজো। ষষ্ঠীর দিন বিকেলে মন্দিরে আগমন হয় চাতরার রাণী মা র। এই পূজোকে ঘিরে চাতরাবাসীর উৎসাহ উদ্দীপনা থাকে চোখে পড়ার মতো। দূর্গা পূজোর চেয়ে এই শীতলা পূজোর টান তাদের কাছে কিছুমাত্র কম থাকেনা।

মা শীতলার মুখের আদল একেবারে মা দূর্গার মতোই। গাত্রবর্ণ হলুদ, বড়ো বড়ো টানা টানা দুইখানি চোখ। সখী পরিবৃতা তিনি। রাণীমা র সারা গায়ে স্বর্ণ অলঙ্কার।

কথিত আছে একসময় এই চাতরা অঞ্চলে বসন্ত রোগের ভীষণ প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সেই সময় চাতরা নিবাসী রামদাস নামে এক মাতৃভক্ত এই অঞ্চলে বসন্ত রোগের প্রাদুর্ভাব দূর করতে মায়ের আরাধনা শুরু করে। এই সময় একদিন তিনি স্বপ্নাদীষ্ট হয়ে শীতলা মায়ের পূজো শুরু করেন এবং এরপর এই অঞ্চল এই রোগমুক্তহয়। এরপর থেকে প্রতি বছর দুশো বছরেরও বেশী সময় ধরে এই অঞ্চলে চলে আসছে এই পূজো এবং চাতরার দাস পরিবার বংশানুক্রমিকভাবে এই পূজোর দায়িত্বে রয়েছেন বলে জানা যায়।

পাঁচদিন ধরে এই পূজো প্রচলিত। অষ্টমীর দিন ভোররাত থেকেই দূরদূরান্ত থেকে এখানে ভক্ত সমাগম হয়। এই দিন কাতারে কাতারে মানুষ আসেন মায়ের বেদীতে জল ঢালতে। ভিড় সামাল দিতে পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারদের প্রায় নাজেহাল অবস্থা হয়ে যায়।

ডাবের জলেই হয় মায়ের মেন পূজো। অষ্টমীতে ঘিয়ে ভাজা লুচি এবং আলু চচ্চড়ি দিয়ে মায়ের ভোগ হয়। শুকনো প্রসাদ দিয়ে মায়ের পূজো হয়। দশমীর দিন চিঁড়ে মুড়কি দই সহকারে দইকর্মা হয়।

পূজো উপলক্ষ্যে এখানে বসে বিরাট মেলা। ঘর গৃহস্থলীর সরঞ্জাম, জিলিপি, গজা খাজা, বাদাম ভাজা, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র, ফুচকা ঘুঘনির পসড়া সাজিয়ে বসেন দোকানিরা , চলে বিকিকিনি।

দশমীর দিন রাণীমা কে শোভাযাত্রা সহকারে নিয়ে গিয়ে চাতরা দাসবাড়ির গঙ্গার ঘাটে বিসর্জন দেওয়া হয়। আবার একটি বছরের অপেক্ষা। তবে এই মন্দিরে সারা বছর শীতলা মায়ের ঘটপূজো হয়ে থাকে। এলাকাবাসী সারা বছরই আসেন এই মন্দিরে পূজো দিতে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *