নবরূপে নভেল করোনাভাইরাসের আগমনপ্রদীপ কুমার দাস

Hits: 2

বিগত ২০ সাল থেকে একটানা তিনবছর কোভিড-১৯ ভাইরাসের নানান প্রজাতি, উপজাতির সংক্রমণে সারাবিশ্ব জুড়ে যে ত্রাসের সৃষ্টি হয়েছিল জনমানসে তার থেকে বিগত দুটি বছরে কিছুটা স্বস্তি পেয়েছিলেন আপামর জনসাধারণ। কিন্তু বর্তমানে সেই স্বস্তির ভাবটা কেটে গিয়ে নতুন করে করোনার নতুন স্ট্রেণ যেটাকে ওমিক্রণের তুতো ভাই বলে সম্বোধন করা হচ্ছে। ভাইরাস জগতের এটাই সাধারণ ঘটনা যে সময়ের ব্যবধানে ভাইরাসের নানারকম চারিত্রিক পরিবর্তন বা ডাক্তারি পরিভাষায় মিউটেশান ঘটে। সেই বিচারে করোনা ভাইরাসও ব্যতিক্রম নয়। অতীতে বহু মিউটেশানের ঘটনার স্বাক্ষী হয়েছেন সারা বিশ্ববাসী। জেএন.১ ভ্যারিয়েন্টের দাপট ছিল খুব বেশি। এবারে বেশকিছুদিন সময়ের গ্যাপে ওই নোভেল করোনাভাইরাসের চারিত্রিক পরিবর্তন ঘটিয়ে জেএন.১ কে পিছনে ফেলে নবরূপে আগমন ঘটেছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশগুলোতে ঘাঁটি গেড়ে বসেছে।

ভারতেও এর আগমন ঘটেছে মহারাষ্ট্র, কেরল, দিল্লী এমনকি পশ্চিমবাংলায় এর পদার্পণ ঘটেছে। কলকাতায় এর সংক্রমণ সম্প্রতি লক্ষ্য করা গেছে। ইতিমধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা পাঁচশো ছুইছুই। শ্রীরামপুরেও এক করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া
গেছে । আমার চেম্বারে জ্বর ও অন্যান্য কিছু উপসর্গ নিয়ে এক অল্পবয়সী মেয়ে আসে , আমার সন্দেহ হ‌ওয়ায় তাকে করোনা টেস্ট করতে বলি এবং তার রিপোর্ট পজেটিভ আসে । তাকে বাড়িতেআ সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়াও একজনের করোনায় সংক্রামিত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া গেছে।

যে সব লক্ষণ নিয়ে আসছেন রোগীরা অতীতের সঙ্গে খুব একটা পার্থক্য নেই। খুসখুসে কাশি, জ্বর,নাক দিয়ে কাঁচা জল পড়া, গায়ে পায়ে ব্যথা, গলায় অসহ্য ব্যথা, জ্বরের সঙ্গে কাঁপুনী, দুর্বলতা, উদরাময়, গা বমিভাব ইত্যাদি। এইসব লক্ষণ নিয়ে শ্রীরামপুরে ডাক্তারদের প্রাইভেট ক্লিনিকে আসছেন কিন্তু করোনার আর টি পি সি আর পরীক্ষার কথা বললে ভুক্তভোগীরা সবিনয়ের সঙ্গে জানাচ্ছেন আমাদের কোভিডের তিনটে ডোজ নেওয়া আছে, আপনি ওষুধ লিখে দিন, ওতেই কমে যাবে। কেউ আর চট করে পরীক্ষা-নিরীক্ষার দিকে যেতে চাইছেন না। উপরন্তু কোভিডের তিনটে ডোজ বুস্টার ডোজ নেওয়া আছে ভেবে আত্মতৃপ্তিতে ভুগছেন অনেকেই। এদের মধ্যে কেউ কেউ রাজি হচ্ছেন পরীক্ষা করাতে। তাদের থেকে যা ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে এই মুহুর্তে ভীত বা সন্ত্রস্ত হওয়ার কোন কারণ নেই। তবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে
সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবার শুরু করতে হবে ঘনঘন হাতমুখ ধোওয়া, মুখে মাস্ক পরা, ক্লিনিক স্যানিটাইজ করা, দূরত্ববিধি মেনে চলা ইত্যাদি।

সেই দিনগুলো আবার ফিরে আসলে আমাদেরকে আবারও ঢুকে পড়তে হবে অন্ধকারের গুহার মধ্যে যেটা আমরা কেউই চাই না।
অতএব সাধু সাবধান! নতুন সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আগে আমাদেরকে আবার সজাগ হতে হবে যাতে করে ওটা পুনরায় এপিডেমিক হয়ে না যায়। আমরা কেউউ চাইবো না অতীতের ২০২০ এর পুনরাবৃত্তি ঘটুক।
বিনয়াবনত
ডা. প্রদীপ কুমার দাস
শ্রীরামপুর, হুগলী, সূচক-৭১২২০১

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *